একথা সত্য যে, পূর্ব জন্মের সুকৃতি ছাড়া কৃষ্ণভক্তি ও বৈষ্ণব সঙ্গ (Vaishnava association) হয় না। সুতরাং, সাধু গুরু বৈষ্ণব পদধূলি হচ্ছে পূর্ব জন্মের সুকৃতি স্বরূপ যা সাধনভজন না করলে এবং সাধুসঙ্গ বৈষ্ণবসঙ্গ না করলে পাওয়া যায় না।
যার যে কুলেই জন্ম হোক না কেন, যার যেমন গুণই থাক না কেন, সে যদি শ্রীভগবানের শুদ্ধভক্তের কৃপা লাভ করে তখন তার আর এই জাগতিক মায়াবদ্ধতা থাকে না। সে তখন শুদ্ধভক্তির দ্বারা শ্রীভগবানের সঙ্গে সম্বন্ধ স্থাপন করে চিন্ময় পরিবেশে বিরাজ করে। শ্রীভগবানের সঙ্গে সম্বন্ধযুক্ত সবকিছুই হচ্ছে চিন্ময়।
রাস্তার ধুলিকণা যখন বায়ুর সঙ্গ লাভ করে, তখন সে বায়ুর সাথে উর্ধ্বগামী হয়। আবার যখন সে বৃষ্টির জলের সঙ্গ পায়, তখন সে নর্দমার কাদায় পরিণত হয়। সুতরাং সঙ্গ খুবই গুরুত্ত্বপূর্ণ একটি বিষয়। প্রকৃতপক্ষে একজন মানুষকে তার সঙ্গের মাধ্যমেই চেনা যায়, সে কোন প্রকৃতির। যদি আমাদের ভগবানে প্রতি ভক্তিভাব ও ভালোবাসা জাগ্রত করতে হয়, তাহলে অবশ্যই ভক্ত সঙ্গ (বৈষ্ণব সঙ্গ) করতে হবে। কারণ শাস্ত্রে আছে, “ভক্তি প্রজায়তে সাধু সঙ্গে”, ━ অর্থাৎ ভক্তির জন্ম হয় সাধু সঙ্গের ফলেই। কথায় আছে, ━
❝সৎ সঙ্গে স্বর্গ বাস
অসৎ সঙ্গে নরগে বাস
সাধু ও বৈষ্ণব সঙ্গে হয় সিদ্ধি লাভ।❞
꧁✸ বৈষ্ণব সঙ্গে দস্যু রত্নাকর হলেন বাল্মিকী মুনি ✸꧂
মৃগারী ব্যাধ অরণ্যে শিকার করে বেড়াত, জীব হত্যা করত। কিন্তু সেই ব্যাধও অবশেষে শ্রীভগবানের শুদ্ধভক্ত নারদ মুনির সংস্পর্শে এসে, তাঁর আশীর্বাদ প্রাপ্ত হয়ে একজন শুদ্ধভক্তে পরিণত হয়েছিল। বাল্মিকী মুনি প্রথম জীবনে একজন দস্যু ছিলেন। সে সময় তিনি দস্যু রত্নাকর নামে পরিচিত ছিলেন। তার পেশা ছিল ডাকাতি করা। মানুষকে হত্যা করে তাদের ধন দ্রব্যাদি অপহরণ করতেন। এইসব দুষ্কর্ম নিয়েই তিনি থাকতেন। কিন্তু পরবর্তীকালে এই দস্যু রত্নাকর নারদ মুনির সান্নিধ্য লাভ করে, তাঁর কৃপা প্রাপ্ত হয়ে মহর্ষি বাল্মিকীতে পরিণত হলেন। তিনি “রামায়ণ” রচনা করলেন এবং শুদ্ধ রামভক্তির দ্বারা তিনি ভগবদ্ধামে প্রবেশের অধিকার প্রাপ্ত হয়েছিলেন।
꧁✸ বৈষ্ণব শ্রীনিবাস আচার্যের কৃপায় দস্যু রাজা বীরহাম্বী হলেন ভক্ত ✸꧂
🌸 আজ থেকে প্রায় পাঁচশো বৎসর আগে এই বাঙলার বনবিষ্ণুপুর রাজ্যে বীরহাম্বীর বলে এক রাজা ছিলেন। তিনি বাইরে নিজেকে খুব ভালো বলে জাহির করতেন, কিন্তু গোপনে গোপনে দুষ্কর্ম করতেন। তাঁর অধীনে কিছু গোয়েন্দা কর্মচারী ছিল, যাদের কাজ হল, রাত্রিবেলা ঐ রাজ্যের মধ্য দিয়ে যাতায়াতকারী যাত্রীদের ধন-রত্নের খোঁজ রাখা এবং পরে সেসব ধন-রত্ন চুরি করে, ডাকাতি করে সরাসরি রাজাকে প্রদান করা। এরপর নিঃস্ব লুণ্ঠিত যাত্রীরা যখন রাজার কাছে গিয়ে অভিযোগ করত, “হে রাজা, দেখুন, আমরা আপনার রাজ্যের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলাম আর আমাদের সবকিছু লুঠেরারা লুঠ করে নিয়েছে, সবকিছু ডাকাতি হয়ে গেছে” অভিযোগ শুনে রাজা অত্যন্ত সহানুভূতির সুরে বলতেন, “খুবই দুঃখের কথা। আমি অত্যন্ত দুঃখিত। আমি যখনই ঐ ডাকাতদের, চোরদের ধরতে পারব তখন তাদের কঠিন শাস্তি দেব। আচ্ছা, আপনারা এই অল্প কিছু টাকা নিয়ে যান এবং আপনাদের যাত্রা শুভ হোক।” রাজার কথা শুনে যাত্রীরা ভাবতো, “ও এই রাজা কত ভালো। রাজা আমাদের সাহায্য করেছে।”
🌸 এই রাজাই আবার রাজসভায় পণ্ডিতদের নিয়ে এসে ভাগবত পাঠ শুনতেন আর এদিকে মনে মনে কুকর্মের চিন্তা করতেন। বহিরঙ্গে ভক্ত, অন্তরঙ্গে চোর। অবশেষে একদিন হল কি, রাজা রাজ-জ্যোতিষীকে জিজ্ঞাসা করলেন “দেখুন তো বিচার করে, শীঘ্রই কোন ভাল যাত্রী মূল্যবান কিছু নিয়ে আমার রাজ্যের মধ্য দিয়ে যাবে কি না।” এরপর জ্যোতিষী গণনা করে বলল “মহারাজ আপনার রাজ্যে মহাধন আসছে। যে সম্পদ আসছে তার মূলোর কোন সীমা পরিসীমা নেই। এত মূল্যবান ধন আপনার রাজ্যে কোনদিন আসেনি। এবং যার কাছে এই সম্পদ থাকে তার সর্বমঙ্গল হয়।” এই কথা শুনে রাজা অত্যন্ত উৎসাহিত হয়ে উঠলেন। ভাবলেন, আজ আমার ভাল দিন এসেছে। তিনি তৎক্ষণাৎ তার গোপন লুঠেরা কর্মচারীদের ডেকে বললেন, “দেখ, এই ধরনের সব লোক আসছে এবং তাদের কাছে এমন সম্পদ আছে যা মহামূল্যবান। তোমরা যদি এই জিনিসটি হরণ করে আমার কাছে নিয়ে আসতে পার, আমি তবে তোমাদের প্রত্যেককে এক হাজার রৌপ্য মুদ্রা পুরস্কার দেব।”
🌸 সেদিন রাত্রে রাজার লুঠেরারা খোঁজ করে দেখল, গরুর গাড়ি করে কিছু যাত্রী এসেছে এবং তারা সব সাধু। যাত্রীরা সবাই গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। তাদের কাছে রয়েছে একটা বড় বাক্স। সেই সময় লুঠেরারা সেই বাক্সটি লুঠ করে রাজার কাছে নিয়ে গেল। রাজা তাদের প্রত্যেককে একহাজার রৌপ্যমুদ্রা পুরস্কার দিয়ে বিদায় করে দিয়ে, নিজেই বাক্সটি নিয়ে সিন্দুক গৃহে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দিলেন। এত মহামূল্য সম্পদ দেখে কেউ যদি পাগল হয়ে যায়। সে যদি রাজাকে হত্যা করে। তাই রাজা কাউকেই এসব দেখাতে চান না। অবশেষে রাজা বাক্সটি খুলে দেখলেন। কিন্তু একি! কোথায় হীরে-মণি-মাণিক্য মহামূল্যবান ধন সম্পদ? বাক্সটি যে গ্রন্থে পরিপূর্ণ। রাজা গ্রন্থগুলি হাতে নিয়ে দেখতে লাগলেন। সংস্কৃত ও বাংলায় রচিত বিভিন্ন গ্রন্থ। কয়েকটি গ্রন্থ পড়ে দেখলেন। লেখা আছে —
রাজা ঠিক বুঝতে পারলেন না এগুলি কি ধরনের গ্রন্থ!
🌸 পরে তিনি রাজপণ্ডিতবর্গকে আহ্বান করে গ্রন্থগুলি দেখালেন। তারা বললেন, “মহারাজ, এতো দেখছি ধর্মগ্রন্থ।” রাজা বললেন, “সে তো আমিও বুঝতে পারছি। কিন্তু এটা কি ধরনের শাস্ত্রগ্রন্থ?” পণ্ডিতেরা বললেন, “সেটা আমরাও ঠিক বুঝতে পারছি না। তবে এটা কৃষ্ণ সম্বন্ধীয় গ্রন্থ।” রাজা এরপর পণ্ডিতদের চলে যেতে বলে ভাবতে লাগলেন, “আমি নিশ্চয়ই কোন সাধু মহাত্মার গ্রন্থ চুরি করেছি। সাধুদের গ্রন্থ চুরি করার ফলে, আমার সর্বনাশ হয়ে গেল। হায়! আমি মহাপাপ করেছি। এতদিন আমি বিষয়ী লোকেদের ধন-সম্পদ অপহরণ করে পাপ করেছি। আজ সাধুর গ্রন্থ চুরি করে মহাপাপ করলাম।”
রাজা ঠিক করলেন তিনি ভাগবত পাঠ শ্রবণ করে পাপ মোচন করবেন। তিনি মনে করলেন ভাগবত শ্রবণ করে তাঁর এই পাপ মোচন হয়ে যাবে। কিন্তু পরে বুঝতে পারলেন প্রকৃতপক্ষে তিনি শুধু পাপই নয়, পাপের চেয়েও ভয়ঙ্কর মহাপরাধ করেছেন। তিনি বৈষ্ণব অপরাধ করেছেন। তিনি বৈষ্ণবের গ্রন্থ চুরি করে বৈষ্ণব অপরাধ করেছেন। আর বৈষ্ণব অপরাধীকে ভগবান বাঁচাতে পারে না, কেউ তাকে বাঁচাবে না, এমন কি ভগবান শ্রীকৃষ্ণ পর্যন্ত তাকে ক্ষমা করবেন না। একমাত্র যে বৈষ্ণবের চরণে অপরাধ হয়েছে, তিনি যদি ক্ষমা করেন তবেই অপরাধীর উদ্ধার হবে। এই ভেবে রাজা তার সেই গোপন লুঠেরাদের ডেকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তোমরা কার কাছ থেকে লুঠ করেছ? এই বাক্সের মধ্যে ধর্মীয় গ্রন্থ ছিল।”
লুঠেরারা জবাব দিল — “হ্যাঁ, তাঁরা সাধু ছিলেন। কিন্তু আমরা তাঁদের সঙ্গে লড়াই করি নি।”
রাজা বললেন,— “আগে কেন এ কথা আমাকে বল নি? তাহলে এগুলো ফেরত দিতে পারতাম।”
লুঠেরারা বলল — “আমরা আপনাকে বিরক্ত করতে চাইনি।”
রাজা তাদের নির্দেশ দিলেন,—“তোমরা যেখান থেকে পার এ গ্রন্থ যাঁর, তাকে খুঁজে বের কর।” কিন্তু তারা অনেক খুঁজে খুঁজেও সাধুদের আর সন্ধান পেল না।
🌸 একদিন এক ব্রাহ্মণ এলেন রাজার সঙ্গে দেখা করতে। সে সময় রাজা ভাগবত পাঠ শ্রবণ করছিলেন। কিন্তু যিনি ভাগবত পাঠ করছিলেন, তিনি মায়াবাদীভাষ্য ব্যাখ্যা করছিলেন। সেই ভাষ্য শুনতে শুনতে ব্রাহ্মণের মুখ বিকৃত হয়ে গেল। রাজা সেটি লক্ষ্য করে বললেন—“এ কি! মহা পণ্ডিতের ভাগবত পাঠ শ্রবণ করে এরকম মুখভঙ্গি করছেন কেন? আপনার কি কোন কষ্ট হচ্ছে?”
ব্রাহ্মণ জবাব দিলেন—“হ্যাঁ, উনি ভাগবত যেভাবে ব্যাখ্যা করছেন, তা শুনে আমার খুব কষ্ট হচ্ছে।”
রাজা বললেন – “আপনি কি এর চেয়ে ভালোভাবে ব্যাখ্যা করতে পারবেন? তাহলে আসন গ্রহণ করে আপনি তা ব্যাখ্যা করুন। আর এর চেয়ে যদি ভাল ব্যাখ্যা না হয়, তাহলে এভাবে পণ্ডিতকে অপমান করার ফলে আমি আপনাকে প্রাণদণ্ড দেব।”
তখন সেই ব্রাহ্মণ আসন গ্রহণ করে ভাগবত খুলে শ্রীগুরু-গৌরাঙ্গ ও বৈষ্ণববৃন্দের উদ্দেশ্যে প্রণতি নিবেদন করে ভাগবত ব্যাখ্যা করতে শুরু করলেন। ব্রাহ্মণের ব্যাখ্যা শ্রবণে সমবেত ভক্তবৃন্দ সেখানে মুগ্ধ হয়ে গেল। রাজাও অদ্ভূত মুগ্ধতা অনুভব করলেন। রাজা নিজে বুঝতে পারলেন, এই ব্রাহ্মণ কোন সাধারণ ব্যক্তি নন, তিনি একজন মহান বৈষ্ণব। রাজার মনে সন্দেহ হল হয়ত আমি এরই গ্রন্থ চুরি করেছি। পাঠ শেষ হওয়ার পর রাজা বিনীতভাবে বললেন, “আপনার সঙ্গে আমার একটা ব্যক্তিগত কথা আছে। আপনি যদি দয়া করে আমার সঙ্গে ভেতরে আসেন!”
যে ঘরে গ্রন্থগুলি রয়েছে, রাজা ব্রাহ্মণকে সেই ঘরে নিয়ে গিয়ে অত্যন্ত বিনীতভাবে তাঁর পরিচয় জানতে চাইলেন।
🌸 ব্রাহ্মণ বললেন, “আমার নাম শ্রীনিবাস দাস। আমি শ্রীল গোপাল ভট্ট গোস্বামীর শিষ্য এবং শ্রীল জীব গোস্বামীর কাছে শিক্ষা প্রাপ্ত হয়েছি। পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং এই কলিযুগে শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য মহাপ্রভু রূপে আবির্ভূত হয়েছেন এই জগতে কৃষ্ণভক্তি প্রচারের জন্য। তাঁর আশীর্বাদধন্য অন্তরঙ্গ পার্ষদগণ শ্রীল রূপ গোস্বামী প্রভু, শ্রীল সনাতন শ্রীনিবাস আচার্য প্রভু আচার্য বাণী গোস্বামী প্রভু বৃন্দাবনে অনেক গ্রন্থ রচনা করেছেন। সেখানে শ্রীল কৃষ্ণদাস কবিরাজ গোস্বামী শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর জীবন চরিত চৈতন্য চরিতামৃত রচনা করলেন। আমি তাঁদের আদেশ প্রাপ্ত হয়ে শ্রীল নরোত্তম দাস ঠাকুর এবং শ্রীল শ্যামানন্দ প্রভুর সঙ্গে সেই সমস্ত গ্রন্থ নিয়ে আসছিলাম। পথিমধ্যে আপনার রাজ্যে একরাত্রিতে সেইসব গ্রন্থগুলি চুরি হয়ে গেল। এখন আমার অস্থির অবস্থা। সেইসব মহান বৈষ্ণব আচার্যগণের সমগ্র জীবনের কাজ সেইসব গ্রন্থের মধ্যে ছিল। কিন্তু সেই গ্রন্থ এখন নিখোঁজ, আমরা তা খুঁজে পাচ্ছি না।”
🌸 এই কথা শুনে, রাজা শ্রীনিবাস আচার্যের পায়ে লুটিয়ে পড়ে বলতে লাগলেন, “আমাকে ক্ষমা করুন । আমাকে ক্ষমা করুন। আমি মহা-অপরাধ করেছি। আপনার গ্রন্থগুলি আমিই চুরি করেছি। এখন এই মহা অপরাধ থেকে আপনি আমাকে ক্ষমা করুন। আজ আমি আপনাকে গুরুরূপে বরণ করলাম।”
🌸 শ্রীনিবাস আচার্য প্রভু তখন সব বুঝতে পারলেন। তিনি বললেন, “ওহে! আগে আমাকে সেই গ্রন্থগুলি দেখান, আমি দেখি সেই গ্রন্থগুলি আমার কিনা। আগেই কেন ও কথা বলছেন?”
রাজা তখন সিন্দুক থেকে সেই ট্রাঙ্কটি বের করে শ্রীনিবাস আচার্য প্রভুকে দেখালেন। শ্রীনিবাস আচার্য প্রভু বললেন–“হ্যাঁ, এগুলি আমারই গ্রন্থ।”
রাজা বললেন, “এ গ্রন্থ আমার রাজ্যের মহা পণ্ডিতগণও বুঝতে পারেনি। দয়া করে তা আমাদের কাছে ব্যাখ্যা করুন । এই গ্রন্থের তত্ত্ব আমরা জানতে চাই।”
শ্রীনিবাস আচার্য বললেন—“না, এই গ্রন্থ আমি নবদ্বীপে নিয়ে যাবো। সেখানে পণ্ডিতেরা এই গ্রন্থগুলির প্রতিলিপি তৈরি করার পর আমরা তা সমস্ত বৈষ্ণবদের কাছে পৌঁছে দেব। এইভাবে তা প্রচারিত হবে।”
রাজা বললেন, “না, না, নবদ্বীপে যেতে হবে না, আমি পণ্ডিত নিয়ে এসে এখানে তা প্রতিলিপি তৈরি করাবো। আপনাকে আর কষ্ট করতে হবে না।” এইভাবে সেই দস্যু রাজা, বৈষ্ণবের সঙ্গ প্রভাবে একজন ভক্তে পরিণত হল। অবশেষে এই রাজা বীরহাম্বীর শ্রীনিবাস আচার্যের কাছ থেকে দীক্ষা গ্রহণ করেন ৷ এই হচ্ছে সাধু সঙ্গ বা বৈষ্ণব সঙ্গের ফল। যার যে কুলেই জন্ম হোক না কেন, যার যে রকম গুণই থাক না কেন, সাধু বৈষ্ণবের সঙ্গ প্রভাবে সেও পরম ভগবদ্ভক্তে পরিণত হয়। বৈষ্ণবের সৎসঙ্গের দ্বারা বৈষ্ণবের গুণ অবৈষ্ণবের মধ্যে আপনা থেকেই রোপণ হয়ে যায়।
✸বৈষ্ণব সঙ্গের ফল ✸
===================
🌸 এই জড় জগতে মায়ার অজ্ঞানতা দূর হলেই জীবের ভগবানের প্রতি আসক্তি জন্মায়, তখনই সে আত্মিক স্তরে অর্থাৎ আমি শরীর নয়, আমি আত্মা,আমি পরমাত্মা গোবিন্দের অংশ – এই ভাবে জীব উন্নীত হয় – মুক্তির নিকট আসে, কিন্তু এই অজ্ঞানতা দূর হওয়া কোনো সহজ কথা নয়, তার জন্য সাধু গুরু বৈষ্ণব সঙ্গ ও কৃপার প্রয়োজন আছে ! গীতা ভাগবত উপলব্ধি করতে হবে।
ইহাতেই সর্ব্ব ইষ্টি জীবভাগ্যে বটে।।