daextlwcn_print_scripts(false);
Sukhur Nalish Dukhur Sarbonash ~ সুখুর নালিশ দুখুর সর্বনাশ_1

Sukhur Nalish Dukhur Sarbonash ~ সুখুর নালিশ দুখুর সর্বনাশ

1 min


188
157 shares, 188 points

Introduction

Sukhur Nalish Dukhur Sarbonash (সুখুর নালিশ দুখুর সর্বনাশ) কবিতার মধ্যে দুই ব্যাক্তি সুখু ও দুখুর বিবাদ দেখা যায় একটি গাভীকে নিয়ে। দুখু গরিব ও ধার্মিক। অন্যদিকে, সুখু লোভী ও সুবিধাবাদী। একদা বাংলায় রাজত্ব করত রাজা, জমিদার। প্রসাশন ছিল তাদের হাতে। সেই প্রশাসনের হাত ধরেই গাভী ফেরত পায় দুখু। শাস্তি হয় সুখুর। 

সুখুর নালিশ দুখুর সর্বনাশ

SUKHUR NALISH DUKHUR SARBONASH

রাজ দরবারের বাইরে ভরেছে কোলাহল চিৎকারে, শুনে সম্বিৎ ফিরে সকলের,

কারোর বা কপালে পড়েছে মরু ভাঁজ, চোখের কোনে পড়েছে কারো দীর্ঘ খাঁজ।

কোথা থেকে ধেয়ে এলো এমন চঞ্চল বাতাস? প্রশ্নের স্রোতে বহমান সকলে

উত্তেজিত সকলে প্রশ্নবানের লাভার উদগীরণে।

অতিচিন্তিত রাজা অস্থির হয়ে ডাকেন রাজদরবারিকে

আদেশ দাও সেপাইকে, ধরে আনো দুই পাজি নচ্ছারকে।

এত বড় দুঃসাহস আমারই আশ্রয়ে আমারই খেয়ে আমারই স্বপ্ন ভঙ্গ করে!

হন্তদন্ত হয়ে ছুটলো সেপাই কোমর বেঁধে বল্লাম বাগিয়ে ধরে।

অনেক ভেবে রাজা জিজ্ঞাসিল মন্ত্রীরে, মোর রাজ্যে কিনা এমন অঘটন!

দূষিত করছে বাতাস দারুন কোলাহলে আমারই রাজদরবারে।

তোমরা দেখছি মোটাসোটা মাসোহারা নিয়ে, বকশিশ টেঁকেতে গুঁজে,

পরচর্চা পরনিন্দা করে, শুধুই ঘুমিয়ে থাকো নিশ্চিন্তে নাকে তেল দিয়ে!

চিন্তায় চিন্তায় আমার গেছে ঘুম উড়ে, সর্বদায় ব্যস্ত আমি রাজ্যবাসীর কথা ভেবে।

আর তোমাদের দেখি নেই কোন চিন্তা! নেই কোন ভাবনা! কেবলই খাও দাও গান্ডে পিন্ডে

সত্যই তোমরা অপদার্থ! আস্ত অকর্মন্ন! কেমন করে দিন কাটাও  বহাল তবিয়তে?

কেবলই লোভ বেড়েছে তোমাদের দিনে দিনে, বুদ্ধি কমেছে প্রতিক্ষণে

ভাবছি যত অবাক হচ্ছি তত! এক সময় তোমরাই ছিলে এ রাজ্যের সব, কত আপনার জন

এখন তোমরাই হয়েছো বুদ্ধিহীন মূর্তিমান এক একটি প্রাণহীন শব।

সেপাই-সন্ত প্রবেশ করে রাজদরবারে, হন্তদন্ত পড়িমড়ি করে।

সে যে রাজার আদেশ – রাখতে পারলে ভালো না হলে ছিন্ন হবে গন্ডদেশ!

দুই হাত জোরে মাথা নত করে প্রনাম ঠুকে সেপাই কয় ভারী গদগদ স্বরে

‘ধরে নয় প্রভু! এনেছি একেবারে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে দুজনারে’।

আজ্ঞা করলে বলি নিঃসংকোচে – বেঁধেছে ঝগড়া একটি গাভীকে নিয়ে

গাভী! কি আশ্চর্য! এমন একটা শান্তশিষ্ট প্রাণীকে নিয়ে মাতাল রাজ্য মাথায় তুলে!

যেমনি সমুদ্র মন্থন থেকে অমৃত ভন্ড নিয়ে রাক্ষস দেবতা ছাপিয়েছিল তিন কুলে।

যতসব পাজি! হতচ্ছাড়া! নচ্ছার! গর্ধবের দল ‘মানে মানে করে বলে ফেলো বাপু,

রক্ত চড়লে মাথায় চড়াবো তোদের শূলে, ঘরদোর পিছুটান সব যাবি ভুলে’।

হাত জোড়ে চেঁচিয়ে ওঠে সুকু ‘মহারাজের জয় হোক! নেবেন প্রনাম এই অধমের’।

অনাথ দুখু জানায় অন্তরের প্রণাম টান টান লুটায়ে – ‘রাজ্যবাসীর কল্যাণ হোক আপনার কৃপায়ে’।

এতো সুবিধার মধ্যে কিসের অসুবিধা! একে একে বল দেখি তোমাদের ঘটনা

মনে রেখো ‘সত্য কথা বলবে সবে, অসৎ দন্ড! সৎ মার্জনা।’

Sukhur Nalish Dukhur Sarbonash ~ সুখুর নালিশ দুখুর সর্বনাশ_3

দুখু বলে মহারাজ আমার গাভী খায় ঘাস ঝোপে, জঙ্গলে, মাঠে ঘাটে

সুকু এসে শাসায় গাভীর অর্ধেক অধিকার তার, খেয়েছে ঘাস তার জমিতে।

অভাবের সংসারে দুধ বেচে চলে সংসার, সুকু এসে দুধ নিয়ে যায় বিনা পয়সায়

কখনও গাভী, কখনও বাছুর ছিনিয়ে নিতে চায়; তর্জনী উঁচিয়ে দেয় হুঙ্কার ‘জোর যার মুলুক তার’।

সুকু করে আপত্তি ‘এ মিথ্যা মহারাজ, গাভী নামেই দুখুর, পালিত হয় আমার জমিতে, আমি ওর অন্নদাতা

পালন করি সন্তান ভেবে, পালক পিতা হিসাবে সামান্য অধিকারটুকু কি অমূলক?’

রাজা থেকে সভাসদ করে মুখ চাওয়াচাওয়ি এ দেখছি ভারী বিপদ – কোনটা মিথ্যে, কোনটা সত্যি?

রাজার পাশে বসা ছোট্ট রাজপুত্র দেয় বিধান ‘এ আর এমন কি? দাও গাভীকে করে আধাআধি!’

সব শুনে রাজা বলেন -‘অসাধারণ! মন্ত্রী জল্লাদকে ডেকে করে দাও ভাগাভাগি’।

দুখু কেঁদে জানায় আকুতি ‘এতে যে জীবনটা যাবে চলে গাভীর! এতে লাভ কি?’

রাজা দেন ধমক ‘তাতে কি? বিধান যখন দিয়েছি মানতে হবে নিশ্চিত’।

কান্নায় ভেঙে হাঁটু মুড়ে জানায় আবেদন- ‘অপরাধ নেবেন না মহারাজ! বরং গাভীটা সুকুকে দিয়েই দিন।

দানেই  আমার সুখ! শেষমেষ থাকবে তো বেঁচে এই ভেবেই আমার শান্তি’।

সুকু থেকে সভাসদ সবাই বেজায় খুশি, ছোট্ট রাজপুত্তর কয় ‘এতো অন্যায় দেখছি’।

রাজপুত্র দেয় বিধি ‘সত্য মহারাজ! গোহত্যা মহাপাপ! এর অন্য উপায় ভেবেছি।

গাভী আর বাছুর কে করে দিন ভাগাভাগি, তাতে কারো যাবেনা প্রাণ দুপক্ষই হবে খুশি।’

রাজা দেন আদেশ মন্ত্রীকে – ‘অক্ষরে অক্ষরে পালন করো তবে, অবহেলাতে পাবে কঠিন শাস্তি।’

দুখু আবার বাধা দিয়ে ওঠে হাত জোড়ে, ‘মহারাজের অশেষ করুনা,

বিবেচনা করুন একজন পিতা হয়ে এক সন্তানকে মাতৃহারা করা হবে অধর্ম, এই পাপে নেই ক্ষমা।

এই পাপ নিয়ে আমৃত্যু বাঁচা অসম্ভব, দোস্ত করুন মার্জনা।’

তারচেয়ে বরং প্রাণী দুটো সুকুর কাছেই থাক, পরিবার নিয়ে থাকবে বেঁচে এতেই আমার শান্তি।’

এমন আত্মদানে সুকু থেকে সভাসদ সবাই বেজায় খুশি, করে বলাবলি ‘এক ঢিলে দুই পাখি’।

রাজপুত্র কয় ‘সত্য মহারাজ! দুখু যেমন মানবিক তেমনি বাস্তবিক! কোথাও যেন অন্যায়ের গন্ধ পাচ্ছি।

সবাই যেথায় খুশি দুঃখী থেকে যাবে দুঃখী উচিত এর নিশ্চিত বিহিত; রাজ্যে থাকবে না কেউ অসুখী।

সুখু-দুখুর কথা শোনা হলো, মহারাজ, গাভীর ইচ্ছেটাও জানা দরকার!

অবাক রাজা জিজ্ঞাসিল ‘সে আবার কেমন কথা? এতো অবলার ওপর ভারী অত্যাচার!

পরিষ্কার করে বল দেখি রাজপুত্র ‘বিহিতের আশায় পাবে কি সকলে নিস্তার’?

কথা মতো শুরু কাজ! গাভী-বাছুর একসাথে এক গোয়ালে বাঁধা হলো খানিক তফাতে।

সেই হব প্রকৃত গাভীর মালিক বিবেচ্য, যে অভুক্ত গাভীকে খাইয়ে সানন্দে দুধ আনতে পারবে সম্মুখে।

গাভী অতি সজাগ প্রাণী, স্পর্শেই যাবে বুঝে কে তার আপন কে পর? কে মালিক কে বর্বর?

কে যায় আগে? সুখু ভাবে দুখু গেলেই বিপদ! নির্ঘাত গাভী হাতছাড়া হল বলে

সুখু ঝাঁপিয়ে আসে আগে, গদগদ বিনয়ের সুরে জানায় আর্জি ‘গাভী আমার দীর্ঘক্ষণ অভুক্ত

আমার জমির ঘাস, আমার দেওয়া জল, আমার হাতের আদর না খেলে হবে না ও তৃপ্ত!’

সুখু যায় আগে, গাভীতে খায় ঘাস মনের সুখে, গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে কানে কি যেন কয় ফিসফিসিয়ে

হাঁটু মুড়ে দুধ দোয়া শুরু করতে গেলেই বাঁধে বিপদ, গাভী করে ছটফট!

বারেবার শিং ঝাঁকিয়ে করে প্রতিবাদ, হাম্বা হাম্বা ডাক ছেড়ে জানায় ক্ষোভের প্রকাশ।

বুঝেও না বোঝার ভান, দেখেও না দেখার ভান, কে জানতো ভয়ঙ্কর হতে চলেছে পরিনাম?

নাছোড়বান্দা দুজনেই! জোড়া পায়ে মারে লাথি! নাছোড় সুকু মাটিতে পড়ে কুপোকাত দুধের বালতি খায় গড়াগড়ি।

রাজা থেকে রাজপরিষদ সকলের চোখ ওঠে কপালে, এ আবার কি?

রাজার আদেশে দুখু যায় অবশেষে, বাঁধন খুলে মুক্ত করে বাছুর, সন্তানকে পেয়ে কাছে মা চাটে গা পরম আদরে।

দাঁড়িয়ে রয় ঠায়ে পাশে, সন্তানের প্রতি মায়ের অমন ভালোবাসা খুবই কম নজরে আসে।

দুখু দুই হাতে করে আদর- এক হাতে বাছুর, আরেক হাতে গাভী; একসাথে তিনজনা বেজায় খুশি।

জড়িয়ে আদর শেষে, কি যেন কয় ফিসফিসিয়ে দুই কানে, শান্ত হয়ে সন্তানকে চাটে আবেগে।

খুশি খুশি দুধ দোয় দুখু, রাজপুত্র খুশিতে বলে ওঠে ‘মহারাজ! গাভীর আচরনে সবই পরিষ্কার’।

রাজার আদেশে দুখু পেল গাভী, শুকুর পেল তিরস্কার শাস্তি আজীবন বন্দি।

দুখু জানায় মিনতি ‘মহারাজ সুকুকে দিন ছেড়ে, অজান্তে গাভী ভরিয়েছে পেট ওর জমিতে, আমি ঋণী’।

মহারাজ শুধায় ‘রাখতে পারি তোমার আর্জি, যদি জানাও গাভীর কানে কি বলেছিলে তুমি?’

লজ্জায় মাথা নত করে জানায় ‘আমি স্বাত্বিক, গাভী নারায়ন! মন ইচ্ছা অপূর্ণ রাখে না, কেবলই কানে হরি নাম জপি’।

Read-More_3

Chotoder Kobita : Ami Doshanan ~ আমি দশানন

Chotoder Kobita: Prokriti O Prithibi ~ প্রকৃতি ও পৃথিবী

Chotoder Kobita: Ghuri Tui Vokatta ~ ঘুড়ি তুই ভোকাট্টা

Chotoder Kobita: Ajob Duniyar Tajjob Ghotona ~আজব দুনিয়ার তাজ্জব ঘটনা

Chotoder Kobita: MoonaMan ~ মুনাম্যান

Chotoder Kobita: Panda ~ পাণ্ডা

Chotoder Kobita: Nishir Nishtobtota ~ নিশির নিঃশব্দতা

Bangla Kobita: Taanchoi ~ তাঞ্চোই

Sukhur Nalish Dukhur Sarbonash ~ সুখুর নালিশ দুখুর সর্বনাশ_2

x


Like it? Share with your friends!

188
157 shares, 188 points
daextlwcn_print_scripts(true);

Thanks for your interest joining to Bangla Kobita Club community.

Something went wrong.

Subscribe to Join Our Community List

Community grow with You. [Verify and Confirm your Email]