daextlwcn_print_scripts(false);
Why do We Suffer in Life _মানুষ দুঃখ-কষ্ট ভোগ করে কেন_1

Why do We Suffer in Life || মানুষ দুঃখ-কষ্ট ভোগ করে কেন?

1 min


186
155 shares, 186 points

মানুষ দুঃখ-কষ্ট ভোগ করে কেন? (Why do We Suffer in Life)

আমাদের প্রত্যেকের মনে প্রশ্ন জাগে – মানুষ দুঃখ-কষ্ট ভোগ করে কেন? (Why do We Suffer in Life)। এর পেছনে কারন কি? 

উত্তরটি হল মানুষ দুঃখ-কষ্ট ভোগ করে নিজ পাপ কর্মের জন্য। আমরা এই জীবনে এবং পূর্ববর্তী জীবনগুলিতে বহু পাপ করেছি। সেই সমস্ত পাপের কারণে আমরা জড় জগতে দুর্দশা ভোগ করছি। আমরা আমাদের দুঃখ-দুর্দশা ভোগের জন্য মানুষকে, অবস্থাকে বা পরিস্থিতিকে দোষারোপ করলেও বৈদিক শাস্ত্র অনুযায়ী, আমরা আমাদের কর্মের কারণেই দুঃখ-কষ্ট দুর্দশা ভোগ করি। পূর্বের কর্মের বিচারে আমরা আজ তার ফল ভোগ করছি।

যখন একজন ফাঁসুড়ে কোন কয়েদীকে ফাঁসি দেয় তখন সে হত্যার অপরাধ করছে না। সে শুধুমাত্র সরকারের প্রতিনিধি রূপে রাজ্যের আদেশ পালন করছে। কেবলমাত্র সে তার কর্তব্য সম্পন্ন করছে। যদি সে প্রত্যাখ্যান করে রাজ্যের কল্যাণের স্বার্থে তবে অন্য কেউ সেটি করবে।

অন্যদিকে, যদি কোন ব্যক্তি আজ আমাদের কোন যন্ত্রণা দেয় তখন সেই ব্যক্তি কিন্তু আমাদের যন্ত্রণার কারণ হন না। আমরা অতীতে যে পাপ কর্ম করেছি তার জন্য আমরা দণ্ড প্রাপ্ত হই এবং কোনও ব্যাক্তিকে প্রস্তুত করা হয় তার মাধ্যমে বর্তমানে আমাদেরকে যন্ত্রণা দেবার জন্য। যদি আমরা ওই  দুঃখ প্রদানকারী ব্যক্তির কাছ থেকে পালিয়ে যেতে সমর্থও হই তবে অন্য কোথাও অপর ব্যক্তিকে প্রস্তুত করা হয় আমাদেরকে যন্ত্রণা দেবার জন্য।

মানুষের দুঃখ-কষ্টের কারন (Reason of suffering in Life)

অতীত জীবন, অতীত কর্মকাণ্ড ভুলে গেলেও এটা সত্যি যে,

পূর্ববর্তী জীবনে কারো আবেগে আঘাত দিয়েছি তাই তারা কেউ আমাদের আবেগে আঘাত দিচ্ছে।

আমরা পূর্বে যতো কাউকে যন্ত্রণা দিয়েছি তা আজ অন্যেরা আমাদের যন্ত্রণা দিচ্ছে।

আমরা পূর্বে হয়তো কাউকে প্রতারিত করেছি তাই আজ আমরা প্রতারিত হচ্ছি।

আমরা পূর্বে হয়তো কারোর সাথে কটু, কঠোর এবং অমানবিক আচরণ করেছি আর আজ তার ফল ভোগ করছি।

আমরা পূর্বে হয়তো কাউকে গ্রাহ্য করিনি তাই তারা আজ আমাদের গ্রাহ্য করে না।

আমরা পূর্বে হয়তো সম্পদ অপচয় করেছি তাই আজ আমরা গরীব।

যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের যন্ত্রণার জমা রাশি পূর্ণরূপে ব্যয়িত হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের যন্ত্রণা ভোগ করতেই হবে। সুতরাং আমাদের দুর্ভাগ্যের জন্য আমরাই দায়ী তাই অন্যকে দোষারোপ করা বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে আমাদেরকে আমাদের দুর্দশার জন্য ভগবানকে দোষারোপ করাও বন্ধ করতে হবে। এর পরিবর্তে আমাদের ভাবতে হবে যে, আমরা কি ভাবে করুণাময় ভগবানের ভক্তিভাব প্রাপ্ত করে আমাদের পূর্বকৃত পাপ থেকে নিজেদের মুক্ত করতে পারি যা আমাদের দুর্দশার কারণ।

আমরা নিজের দ্বারা নিজের পাপ খণ্ডন করে মুক্ত হতে পারি না। ঠিক যেমন একজন মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামী জেল থেকে পালিয়ে নিজের প্রাণ রক্ষা করতে পারে না। তার একমাত্র আশা হলো সুপ্রিম কোর্ট অথবা সরকার থেকে ক্ষমা প্রাপ্তি। একজন আসামী তার অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ আদালত (সুপ্রিম কোর্ট) থেকে দণ্ডাজ্ঞ পাবার পর সে কখনোই বলতে পারে না যে সে নিরপরাধ। এক্ষেত্রে সে কেবল তার দোষ স্বীকার করে মানবিকতার পরিপ্রেক্ষিতে ক্ষমা ভিক্ষা করতে পারে মাত্র। তার ক্ষমা প্রার্থনাটি গ্রাহ্যও হতে পারে বা প্রত্যাখ্যানও হতে পারে কিন্তু এটিই তার একমাত্র আশা।

Why do We Suffer in Life _ মানুষ দুঃখ-কষ্ট ভোগ করে কেন_2

ভগবানের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা

একইভাবে, আমাদের পরম পুরুষোত্তম ভগবানের কাছে সর্বদা ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত। আমাদের বিগত সমস্ত জীবনের অর্জিত পাপ সমূহ থেকে মুক্তির জন্য তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত। জড় জগতে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী অথবা সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি আবেদন স্বীকার অথবা প্রত্যাখ্যান করতে পারেন। কিন্তু চিন্ময় জগতে এই ব্রম্ভান্ডের অধিপতি, আদিপুরুষ, পরম করুণাময় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কখনো আমাদের প্রত্যাখ্যান করবেন না। যদি আমাদের প্রার্থনা একান্তিক হয় এবং আমরা আমাদের পূর্বকৃত অপরাধের জন্য সত্যি অনুতপ্ত হয়ে যদি অনুশোচনা জ্ঞাপন করি তাহলে তিনি আমাদের নিশ্চিত ক্ষমা করবেন। প্রকৃতপক্ষে তিনি আমাদের সমস্ত অপরাধ থেকে মুক্ত করে সাদরে গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছেন।

আমাদের ভগবানের কাছে প্রার্থনা করা উচিত “হে ভগবান! আপনি অগ্নিসম তেজস্বী, সর্ব শক্তিমান, আপনাকে অসংখ্য দণ্ডবৎ প্রণাম নিবেদন করি। হে পরম করুণাময়, আপনি আমাকে যথাযথভাবে চালিত করুন, যার পরিণামে আমি আপনাকেই প্রাপ্ত হই। আপনি আমার অতীত কর্ম সম্বন্ধে সম্পূর্ণ অবগত, তাই কৃপা করে পরমার্থ লাভের অগ্রগতির পথে প্রতিবন্ধক স্বরূপ পূর্বপাপকর্মের ফল থেকে আমাকে মুক্ত করুন।” —- শ্রীঈশোপনিষদ মন্ত্র ১৮

সুতরাং, যন্ত্রণা যখন আসে তখন অন্য কাউকে দোষারোপ না করে আমাদের নিজেদেরকে দোষারোপ করা উচিত। আমাদের দৃঢ়ভাবে সত্য স্বীকার করা উচিত যে জ্ঞানত বা অজ্ঞানতার কারণে আমরা যে ভয়ানক ভুল করেছিলাম তার জন্যই আজ তাই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পতিত হয়েছি।

যদি আমরা আমাদের অজ্ঞতার কারণে পাপ করে বসি, সেটি কিন্তু কোন অজুহাত হতে পারে না। প্রকৃতির আইন অতি কঠোর। আমরা সজ্ঞানে বা অজ্ঞানে যাই করি না কেন তার খেসারত আমাদের দিতেই হবে। যদি কোন শিশু আগুনের মধ্যে তার আঙুল দেয়, আগুন তার আঙুল পোড়াবেই। আগুন কখনোই চিন্তা করে না যে যেহেতু সে শিশু তাই তার আঙুল দগ্ধ করা উচিত নয়।

Why do We Suffer in Life _ মানুষ দুঃখ-কষ্ট ভোগ করে কেন_3

ভগবানের দিব্য নাম জপ

ভগবান শ্রীকৃষ্ণের দিব্য নাম জপ সমস্ত পাপ ভস্মীভূত করে —

সুতরাং এটি হচ্ছে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ যে, ভগবান প্রদত্ত আইন অনুযায়ী আমাদের জীবন যাপন করা উচিত। আমাদের এই শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত যে কোনটা সদাচার আর কোনটা কদাচার। কোনটা পাপ এবং কোনটা পাপ নয়। আমরা এই সমস্ত তত্ত্ব বৈদিক শাস্ত্র থেকে জানতে পারি। আমরা আরও জানতে পারি কিরূপে ভগবত কেন্দ্রিক জীবন যাপন করে আমরা চরম দুর্দশা থেকে রক্ষা পেতে পারি। ভগবদ্গীতা এবং শ্রীমদ্ভাগবত হলো সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ বৈদিক শাস্ত্র যা আমাদের কলুষমুক্ত সুখী জীবনের মার্গ দর্শন করায়।

ভক্তিবেদান্ত শ্রীল প্রভুপাদ আমাদের জন্য বিষয়টিকে আরও সহজ করে দিয়েছেন। তিনি আমাদের বলেছেন চারটি বিধিবদ্ধ নিয়ম পালন করতে, যথা – আমিষ আহার বর্জন, জুয়া খেলা বর্জন, নেশা বর্জনঅবৈধ সঙ্গ বর্জন এবং সেই সঙ্গে আমাদের হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করা উচিত।

হরেকৃষ্ণ মহামন্ত্র

হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ, কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।

হরে রাম হরে রাম, রাম রাম হরে হরে ।।

আমরা যদি এই নির্দেশ মেনে চলি তাহলে পাপ আমাদের কোন মতেই স্পর্শ করতে পারবে না। তাহলে পূর্বকৃত পাপের কি হবে? ভগবান শ্রীকৃষ্ণের দিব্য নাম জপ এতই শক্তিশালী যে তা পূর্বকৃত সমস্ত পাপকে ভস্মীভূত করে দেয়। “যেমন আগুন শুষ্ক তৃণকে ছাইয়ে পরিণত করে তেমনই ভগবানের দিব্য নাম যদি কেউ জপ করে তা নিশ্চিত রূপে তার সমস্ত পাপ কর্মের ফলকে ভস্মীভূত করে দেয়।”

শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য মহাপ্রভু তার শ্রীশিক্ষাষ্টকমের প্রার্থনায় বলেছেন যে, জপ আমাদের সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত করে এবং বারংবার জন্ম-মৃত্যুর মহাদাবাগ্নি নির্বাপিত করে।

পরমপুরুষোত্তম ভগবান শরণাগত জীবাত্মাদের সমস্ত পাপ থেকে রক্ষা করেন —–

সুতরাং পবিত্র জীবন যাপন এবং ভগবানের শরণাগতিই হলো দুর্দশা থেকে মুক্তি লাভের সর্বোত্তম পন্থা। আমাদের সজ্ঞানে এবং অজ্ঞানে পূর্বকৃত সমস্ত পাপ কর্মের জন্য ভগবানের নিকট পুনঃ পুনঃ ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত। আমাদের শপথ গ্রহণ করা উচিত যে আর কোন পাপ কর্ম করবো না। আমাদের ভগবানের নিকট আরও প্রার্থনা করা উচিত যে, ‘হে ভগবান! আপনি কৃপা করে সহায়তা প্রদান করুন যাতে আমরা পাপকর্মে লিপ্ত না হয়ে সদাচারীর জীবন যাপন করতে পারি।’ একবার যদি আমরা তাঁর শরণাগত হই তাহলে তিনি আমাদের পূর্বকৃত সমস্ত পাপকর্মের ফল স্বরূপ দুর্দশা থেকে মুক্ত করেন এবং সেই বুদ্ধিযোগ প্রদান করেন যাতে আমরা পুনরায় পাপকর্ম থেকে বিরত থাকতে দৃঢ়বদ্ধ হই।

শ্রীল প্রভুপাদ ব্যাখ্যা করেছেন, “মানুষ মাত্রই ভুল করে। বদ্ধজীব মাত্রই প্রায়শ ভুল করে এবং এই প্রকার অজ্ঞাত পাপের একমাত্র প্রতিকার হচ্ছে ভগবৎ চরণে আত্মনিবেদন করা যাতে তিনি পথ-নির্দেশ প্রদান করেন। সম্পূর্ণ শরণাগত আত্মার দায়িত্ব ভগবান স্বয়ং গ্রহণ করেন এভাবেই শুধু ভগবানের প্রতি আত্মনিবেদন ও তাঁর নির্দেশ অনুসারে কর্ম অনুষ্ঠান দ্বারা সকল সমস্যারই সমাধান হয়।”

 

Read-More_4

আরও পড়ুন: ভগবতগীতায় উল্লেখিত শ্রীকৃষ্ণের নাম ও অর্জুনের নামের অর্থ কি?

আরও পড়ুন: Bhagavad Gita Mahatmya || ভগবদগীতা মাহাত্ম্য ও তার তাৎপর্য

x

Like it? Share with your friends!

186
155 shares, 186 points
daextlwcn_print_scripts(true);

Thanks for your interest joining to Bangla Kobita Club community.

Something went wrong.

Subscribe to Join Our Community List

Community grow with You. [Verify and Confirm your Email]